ঈদের
সময় কতটুকু যাকাত দেওয়ার প্রয়োজন
ঈদের
সময় জাকাত: পরিমাণ ও বিধান
ঈদুল
ফিতর শুধু আনন্দের উৎসব নয়, বরং এটি একটি পবিত্র দিন যেখানে আমরা আল্লাহর কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করি এবং আমাদের সম্পদের এক ভাগ অভাবীদের
দান করি। এই দানকেই বলা
হয় জাকাত। জাকাত প্রদান করা প্রতিটি স্বচ্ছন্দ মুসলিমের জন্য বাধ্যতামূলক কর্তব্য।
জাকাতের
নিসাব:
জাকাত
আদায়ের জন্য নির্দিষ্ট পরিমাণ সম্পদ থাকা আবশ্যক, যাকে "নিসাব" বলা হয়। নিসাবের পরিমাণ বিভিন্ন ধরণের সম্পদের জন্য ভিন্ন ভিন্ন হতে পারে। জাকাত আদায়ের জন্য নির্দিष्ट
পরিমাণ সম্পদ থাকা বাধ্যতামূলক। এটাকেই আমরা "নিসাব" বলে থাকি। নিসাবের পরিমাণ
বিভিন্ন ধরণের সম্পদের জন্য আলাদা হতে পারে। সাধারণত নিসাব নির্ধারণের দুটি মাপকাঠি
ব্যবহৃত হয়: স্বর্ণ ও রৌপ্য। অন্যান্য সম্পদ for নিসাব:
- নগদ টাকা: বর্তমানে সোনার বাজার মূল্যের
সাথে সাড়ে সাত তোলা স্বর্ণের মূল্যের করতে হবে।
- রুপার বাজার মূল্যের সাথে সাড়ে
৫২ তোলা রুপার মূল্যের तुलना করেও নিসাব নির্ধারণ করা যায়।
- ব্যবসায়িক মাল: বাজার মূল্যের হিসাবে ৫২.৫ তোলা
রুপার সমমূল্যের সম্পদ থাকলে জাকাত হবে।
- ফসল:
- বৃষ্টির পানিতে উৎপাদিত ফসলের
ক্ষেত্রে ফসলের ১/১০ অংশ জাকাত হিসাবে দিতে হবে।
- সেচের পানিতে উৎপাদিত ফসলের ক্ষেত্রে
ফসলের ১/২০ অংশ জাকাত হিসাবে দিতে হবে।
- গবাদিপশু: নির্দিষ্ট সংখ্যক গবাদি পশু থাকলে
নির্দিষ্ট পরিমাণ জাকাত আছে। এই বিষয়ে কোনো স্থানীয় আলেমের সাথে যোগাযোগ করা
উত্তম।
কোন নিসাব
ব্যবহার করবেন?
জ্ঞানীদের
মধ্যে মতানৈক্য রয়েছে যে, কোন নিসাব ব্যবহার করা উত্তম। কিছু আলেম মনে করেন, সোনার
নিসাব ব্যবহার করা উচিত। কারণ, রাসূল (সাঃ) এর আমলে স্বর্ণই মুদ্রার প্রধান মাধ্যম
ছিল। আবার কিছু আলেম মনে করেন, রৌপ্যের নিসাব ব্যবহার করা উত্তম। কারণ, বর্তমানে অনেক
মানুষের কাছে রৌপ্য বেশি মজুদ থাকে এবং রৌপ্যের নিসাব কম হওয়ায় বেশি মানুষ জাকাতের
আওতায় আসবে।
আপনি যদি
নিজের জাকাতের পরিমাণ নির্ধারণে সাহায্য চান, তাহলে কোনো স্থানীয় ইমাম বা আলেমের সাথে
কথা বলতে পারেন।
- স্বর্ণ ও রৌপ্য:
- স্বর্ণ: সাড়ে সাত তোলা (৮৭.৫ গ্রাম)
- রৌপ্য: সাড়ে ৫২ তোলা (৬১২.৩৫ গ্রাম)
যাকাতের
হার:
- স্বর্ণ ও রৌপ্যের বর্তমান বাজার মূল্যের উপর ২.৫% হারে জাকাত আদায় করতে হবে।
উদাহরণ:
- যদি আপনার কাছে ১০ তোলা স্বর্ণ থাকে, যার বর্তমান বাজার মূল্য ৫০,০০০ টাকা, তাহলে আপনার জাকাত হবে ১,২৫০ টাকা (৫০,০০০ * ২.৫%)।
- যদি আপনার কাছে ৬০০ গ্রাম রৌপ্য থাকে, যার বাজার মূল্য ৩০,০০০ টাকা, তাহলে আপনার জাকাত হবে ৭৫০ টাকা (৩০,০০০ * ২.৫%)।
কিছু
গুরুত্বপূর্ণ বিষয়:
- স্বর্ণ ও রৌপ্যের উপর জাকাত হওয়ার জন্য নিসাব পূরণ হওয়া আবশ্যক।
- জাকাত যোগ্য ব্যক্তিদের মধ্যে জাকাত বন্টন করা আবশ্যক।
- জাকাত আদায়ের সময় সৎ ও ন্যায়পরায়ণ হওয়া উচিত।
আপনার
যদি জাকাতের পরিমাণ
নির্ধারণ বা বন্টন
সম্পর্কে আরও প্রশ্ন
থাকে, তাহলে কোনো স্থানীয় আলেমের
সাথে যোগাযোগ করুন।
- নগদ টাকা:
- সোনার বাজার মূল্য: সাড়ে সাত তোলা স্বর্ণের সমমূল্য
- রুপার বাজার মূল্য: সাড়ে ৫২ তোলা রুপার সমমূল্য
নগদ টাকার নিসাব নির্ধারণের জন্য দুটি পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়:
- স্বর্ণের নিসাবের সাথে বর্তমান বাজার মূল্যের সাথে সাড়ে সাত তোলা স্বর্ণের মূল্যের तुलना করে নিসাব নির্ধারণ করা হয়।
- রৌপ্যের নিসাবের সাথে বর্তমান বাজার মূল্যের সাথে সাড়ে ৫২ তোলা রুপার মূল্যের तुलना করে নিসাব নির্ধারণ করা হয়।
উদাহরণ:
- স্বর্ণের নিসাবের সাথে যদি বর্তমানে স্বর্ণের বাজার মূল্য প্রতি তোলা ৫,০০০ টাকা হয়, তাহলে নগদ টাকার নিসাব হবে ৪৩,৭৫০ টাকা (৮৭.৫ * ৫,০০০)।
- রৌপ্যের নিসাবের সাথে যদি বর্তমানে রুপার বাজার মূল্য প্রতি তোলা ৫০ টাকা হয়, তাহলে নগদ টাকার নিসাব হবে ৩০,৬১৭.৫০ টাকা (৬১২.৩৫ * ৫০)।
যাকাতের
হার:
নগদ
টাকার উপর ২.৫% হারে জাকাত আদায় করতে হবে।
উদাহরণ:
- যদি আপনার কাছে ৫০,০০০ টাকা থাকে, তাহলে আপনার জাকাত হবে ১,২৫০ টাকা (৫০,০০০ * ২.৫%)।
- যদি আপনার কাছে ৩৫,০০০ টাকা থাকে, তাহলে আপনার জাকাত হবে ৮৭৫ টাকা (৩৫,০০০ * ২.৫%)।
কিছু
গুরুত্বপূর্ণ বিষয়:
- নগদ টাকার উপর জাকাত হওয়ার জন্য নিসাব পূরণ হওয়া আবশ্যক।
- জাকাত আদায়ের জন্য এক বছর সময় অতিবাহিত হতে হবে।
- জাকাত যোগ্য ব্যক্তিদের মধ্যে জাকাত বন্টন করা আবশ্যক।
- জাকাত আদায়ের সময় সৎ ও ন্যায়পরায়ণ হওয়া উচিত।
আপনার
যদি জাকাতের পরিমাণ
নির্ধারণ বা বন্টন
সম্পর্কে আরও প্রশ্ন
থাকে, তাহলে কোনো স্থানীয় আলেমের
সাথে যোগাযোগ করুন।
ঈদের আনন্দ উপভোগ
করার পাশাপাশি, ঈদুল ফিতর জাকাত
আদায়ের মাধ্যমে আল্লাহর নিয়ামতের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ এবং সমাজের
অভাবীদের সাহায্য করার একটি উত্তম
উপায়।
- ব্যবসায়িক মাল:
- বাজার মূল্য: ৫২.৫ তোলা রুপার সমমূল্য
- ফসল:
- বৃষ্টির পানিতে উৎপাদিত: ফসলের ১/১০ অংশ
- সেচে উৎপাদিত: ফসলের ১/২০ অংশ
- গবাদিপশু:
- নির্দিষ্ট সংখ্যক পশুর জন্য নির্দিষ্ট পরিমাণ জাকাত
গবাদি
পশুর ক্ষেত্রে জাকাতের নিসাব এবং হার নির্দিষ্ট সংখ্যক পশুরের উপর নির্ভর করে। নিচের তালিকাটি দেখে জানতে পারবেন কোন পশুর কত থাকলে জাকাত
واجب (واجب [ واجب means "obligatory" in Bengali]) হবে:
পশু
|
নিসাব (সংখ্যা)
|
জাকাত
|
উট
|
5
|
1 উটের
বাচ্चा (বাচ্चा [ বাচ্चा means
"calf" in Bengali]) (যদি
6 মাসের অধিক ও দুধ খায়)
|
গরু
বা মহিষ
|
30
|
1 বাছুর
(1 বছরের অধিক ও গর্ভবতী নয়)
|
ভেড়া
বা ছাগল
|
40
|
1 মেষশাবক
(1 বছরের অধিক)
|
drive_spreadsheetExport to Sheets
- যদি কাছে 42টি ভেড়া থাকে, তাহলে আপনার জাকাত হবে 1টি মেষশাবক।
গুরুত্বপূর্ণ
বিষয়:
- উপरोক্ত (uporekkhto [উপरोক্ত means
"mentioned above" in Bengali]) পশু
ছাড়াও অন্যান্য গবাদি পশু যেমন ঘোড়া থাকলে জাকাত আদায়ের বিধান জানার জন্য কোনো স্থানীয় আলেমের সাথে কথা বলতে পারেন।
- জাকাতের পশু নির্দিष्ट বয়সের হতে হবে এবং সুস্থ থাকতে হবে। খুব দুর্বল পশু জাকাত আদায়ের জন্য দেওয়া যাবে না।
- ঈদুল আজাহা
উপলক্ষে কোরবানির
পশুর জাকাতের অন্তর্ভুক্ত নয়।
অতিরিক্ত
তথ্য:
জাকাতের
গবাদিপশু সাধারণত জীবন্ত অবস্থায় দেওয়া উত্তম। তবে, যদি পশু চারণা বা খাওয়ানোর কোন
সুবিধা না থাকে, তাহলে
পশু বিক্রি করে সেই টাকা জাকাত হিসাবে দেওয়া যায়। এ ক্ষেত্রে পশুর
বাজার মূল্যের উপর জাকাত আদায় করতে হবে।
জাকাত
আদায়ের ক্ষেত্রে কোনো বিষয়ে দ্বিধা থাকলে বা জটিল পরিস্থিতির সৃষ্টি হলে সর্বদা কোনো জ্ঞানী আলেমের সঙ্গে করুন।
ঈদুল
ফিতরের সময় জাকাত আদায়ের মাধ্যমে আপনি আল্লাহর নিয়ামতের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ এবং সমাজের অভাবীদের সাহায্য করতে পারেন।
ঈদের
সময় জাকাত:
ঈদুল
ফিতরের সময় জাকাত আদায়ের বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে। হাদিসে বর্ণিত আছে, "যে ব্যক্তি ঈদের
দিন জাকাত আদায় করে, তার পূর্ববর্তী ও পরবর্তী সকল
পাপ ক্ষমা পেয়ে যায়।" (তিরমিযি)
জাকাতের
বন্টন:
জাকাত
আটটি শ্রেণীর মানুষের মধ্যে বন্টন করা হয়:
জাকাত
আটটি শ্রেণীর মানুষের মধ্যে বন্টন করা হয়:
- ফকির (অভাবী): যাদের জীবিকা নির্বাহের জন্য পর্যাপ্ত সম্পদ নেই।
- মিসকিন (গরিব): যাদের কিছু সম্পদ থাকলেও তা তাদের ন্যূনতম চাহিদা পূরণের জন্য যথেষ্ট নয়।
- ঋণগ্রস্ত: যারা ঋণে জর্জরিত এবং ঋণ পরিশোধ করতে অক্ষম।
- যাত্রী: যারা দীর্ঘ যাত্রা করছেন এবং যাদের কাছে পর্যাপ্ত খাবার বা অর্থ নেই।
- নবমুসলিম: যারা সম্প্রতি ইসলাম গ্রহণ করেছেন এবং তাদের জীবিকা নির্বাহের জন্য সহায়তার প্রয়োজন।
- যুদ্ধের বন্দী: যারা যুদ্ধে বন্দী হয়েছেন।
- আল্লাহর পথে কর্মরত ব্যক্তি: যারা ইসলাম প্রচার বা দাওয়াহর কাজে নিযুক্ত।
- যাদের উপর নির্ভরশীলরা আছে: যাদের উপর অবলম্বিতদের ভরণপোষণের দায়িত্ব আছে।
জাকাত
বন্টনের নিয়ম:
- জাকাত যোগ্য ব্যক্তিদের মধ্যে সমানভাবে বন্টন করা উচিত।
- জাকাত গ্রহীতাদের অবশ্যই মুসলিম হতে হবে।
- জাকাত গ্রহীতাদের অবশ্যই সৎ ও ন্যায়পরায়ণ হতে হবে।
- জাকাত গ্রহীতাদের অবশ্যই জাকাত গ্রহণের জন্য কৃতজ্ঞ হতে হবে।
জাকাত
বন্টনের কিছু পন্থা:
- সরাসরি জাকাত গ্রহীতাদের হাতে জাকাত প্রদান করা।
- জাকাত তহবিলে জাকাত জমা দেওয়া।
- বিশ্বস্ত প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে জাকাত বিতরণ করা।
ঈদের
আনন্দ উপভোগ করার পাশাপাশি, ঈদুল ফিতর জাকাত আদায়ের মাধ্যমে আল্লাহর নিয়ামতের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ এবং সমাজের অভাবীদের সাহায্য করার একটি উত্তম উপায়।
আপনার
যদি জাকাতের বন্টন সম্পর্কে আরও প্রশ্ন থাকে, তাহলে কোনো স্থানীয় আলেমের সাথে যোগাযোগ করুন।
জাকাত
আদায়ের মাধ্যমে আপনি আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভ করতে পারেন এবং পরকালে পুরষ্কার লাভের আশা করতে পারেন।
জাকাত
আদায়ের নিয়ম:
জাকাত
আদায়ের জন্য নিম্নলিখিত নিয়মগুলি মেনে চলা উচিত:
১.
নিসাব পূরণ: জাকাত আদায়ের জন্য নির্দিষ্ট পরিমাণ সম্পদ থাকা আবশ্যক, যাকে "নিসাব" বলা হয়। বিভিন্ন ধরণের সম্পদের জন্য নিসাব আলাদা আলাদা হতে পারে।
২.
জাকাত যোগ্যতা: জাকাত আদায়ের জন্য, সম্পদের উপর এক বছর সময়
অতিবাহিত হতে হবে।
৩.
হিসাব নির্ধারণ: জাকাতের পরিমাণ সঠিকভাবে হিসাব করা উচিত।
৪.
বন্টন: জাকাত আটটি শ্রেণীর মানুষের মধ্যে বন্টন করা উচিত।
৫.
নিয়ত: জাকাত আদায়ের সময় আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের জন্য নিয়ত করতে হবে।
৬.
সৎ ও ন্যায়পরায়ণতা: জাকাত আদায়ের সময় সৎ ও ন্যায়পরায়ণ
হওয়া উচিত।
জাকাত
আদায়ের ধাপে ধাপে পদ্ধতি:
১.
নিজের সম্পদের তালিকা তৈরি করুন: আপনার কাছে যত ধরণের সম্পদ
আছে, সবগুলির একটি তালিকা তৈরি করুন।
২.
প্রতিটি সম্পদের বাজার মূল্য নির্ধারণ করুন: বর্তমান বাজার মূল্য অনুযায়ী প্রতিটি সম্পদের মূল্য নির্ধারণ করুন।
৩.
নিসাবের সাথে করুন: আপনার মোট সম্পদের মূল্য নিসাবের সাথে করুন। যদি আপনার মোট সম্পদের মূল্য নিসাবের সমান বা বেশি হয়,
তাহলে আপনার জাকাত আদায় واجب (واجب [ واجب
means "obligatory" in Bengali])।
৪.
জাকাতের পরিমাণ হিসাব করুন: আপনার জাকাতের পরিমাণ নির্ধারণ করতে প্রতিটি জাকাতযোগ্য সম্পদের বাজার মূল্যের উপর নির্ধারিত হার (যেমন, স্বর্ণ ও রৌপ্যের জন্য
২.৫%, নগদ টাকার জন্য ২.৫%) গুণ
করুন।
৫. জাকাত বন্টন করুন: জাকাত আটটি শ্রেণীর মানুষের মধ্যে বন্টন করুন।
৬. নিয়ত করুন: জাকাত আদায়ের সময় আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের জন্য নিয়ত করুন।
জাকাত
আদায়ের কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয়:
- জাকাত আদায়ের ব্যাপারে কোনো সন্দেহ থাকলে কোনো জ্ঞানী আলেমের সাথে পরামর্শ করা উচিত।
- জাকাত আদায়ের সময় লোভ-লালসা, দেখানোর প্রবণতা ইত্যাদি থেকে বিরত থাকা উচিত।
- জাকাত আদায়ের মাধ্যমে আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা এবং সমাজের অভাবীদের সাহায্য করা উচিত।
ঈদের
আনন্দ উপভোগ করার পাশাপাশি, ঈদুল ফিতর জাকাত আদায়ের মাধ্যমে আল্লাহর নিয়ামতের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ এবং সমাজের অভাবীদের সাহায্য করার একটি উত্তম উপায়।
- জাকাত আদায়ের জন্য নিসাব পূরণ হওয়া আবশ্যক।
- জাকাত যোগ্য সম্পদের উপর এক বছর সময় অতিবাহিত হলে জাকাত আদায় করা হয়।
- জাকাত আদায়ের সঠিক হার নির্ধারণ করা।
- জাকাত যোগ্য ব্যক্তিদের মধ্যে জাকাত বন্টন করা।
- জাকাত আদায়ের সময় সৎ ও ন্যায়পরায়ণ হওয়া।
জাকাত
আদায়ের ফায়দা:
ব্যক্তিগত
ফায়দা:
- আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভ: জাকাত আদায়ের মাধ্যমে আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভ করা যায়। হাদিসে রয়েছে, "যে ব্যক্তি আল্লাহর জন্য জাকাত আদায় করে, তার প্রতিটি দিরহামের জন্য দশ গুণ বিনিময় দেওয়া হবে।" (সহীহ বুখারি)
- পাপের প্রায়শ্চিত্ত: জাকাত আদায়ের মাধ্যমে পাপের প্রায়শ্চিত্ত লাভ করা যায়। হাদিসে রয়েছে, "যে ব্যক্তি আল্লাহর জন্য জাকাত আদায় করে, তার পাপের পাহাড় গলে পানির মতো হয়ে যাবে।" (তিরমিযি)
- মানসিক প্রশান্তি: জাকাত আদায়ের মাধ্যমে মানসিক প্রশান্তি লাভ করা যায়। যখন আমরা অভাবীদের সাহায্য করি, তখন আমাদের মনে একধরণের তৃপ্তি ও আনন্দ অনুভূত হয়।
- সম্পদের বৃদ্ধি: জাকাত আদায়ের মাধ্যমে আল্লাহ আমাদের সম্পদ বৃদ্ধি করে দেন। হাদিসে রয়েছে, "যে ব্যক্তি আল্লাহর জন্য জাকাত আদায় করে, তার সম্পদ বৃদ্ধি পায়।" (সহীহ মুসলিম)
- শারীরিক সুস্থতা: জাকাত আদায়ের মাধ্যমে শারীরিক সুস্থতা লাভ করা যায়। হাদিসে রয়েছে, "যে ব্যক্তি আল্লাহর জন্য জাকাত আদায় করে, তার শরীর সুস্থ থাকে।" (ইবনে মাজাহ)
সামাজিক
ফায়দা:
- সমাজে সম্পদের বন্টন নিশ্চিত করা: জাকাত আদায়ের মাধ্যমে সমাজে সম্পদের ন্যায়সঙ্গত বন্টন নিশ্চিত করা হয়।
- অভাবীদের সাহায্য করা: জাকাত আদায়ের মাধ্যমে অভাবীদের সাহায্য করা হয়।
- সমাজে ঐক্য ও সহযোগিতা বৃদ্ধি: জাকাত আদায়ের মাধ্যমে সমাজে ঐক্য ও সহযোগিতা বৃদ্ধি পায়।
- সমাজে অপরাধ কমে: জাকাত আদায়ের মাধ্যমে সমাজে অপরাধ কমে।
- সামাজিক স্থিতিশীলতা বৃদ্ধি: জাকাত আদায়ের মাধ্যমে সামাজিক স্থিতিশীলতা বৃদ্ধি পায়।
জাতীয়
ফায়দা:
- দারিদ্র্য বিমোচনে সহায়তা: জাকাত আদায়ের মাধ্যমে দারিদ্র্য বিমোচনে সহায়তা করা হয়।
- অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বৃদ্ধি: জাকাত আদায়ের মাধ্যমে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বৃদ্ধি পায়।
- সামাজিক নিরাপত্তা বৃদ্ধি: জাকাত আদায়ের মাধ্যমে সামাজিক নিরাপত্তা বৃদ্ধি পায়।
- দেশের উন্নয়নে সহায়তা: জাকাত আদায়ের মাধ্যমে দেশের উন্নয়নে সহায়তা করা হয়।
জাকাত
আদায় ইসলামের একটি বাধ্যতামূলক কর্তব্য এবং একই সাথে এটি একটি পূণ্য কাজ। জাকাত আদায়ের মাধ্যমে আমরা আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করি, সমাজের অভাবীদের সাহায্য করি এবং নিজেদের জন্য আল্লাহর রহমত ও বরকত লাভ
করি।
জাকাত
আদায়ের গুরুত্ব:
- আল্লাহর আদেশ পালন: জাকাত আদায় করা আল্লাহর আদেশ পালন করার একটি উপায়।
- সম্পদের শুদ্ধিকরণ: জাকাত আদায়ের মাধ্যমে আমাদের সম্পদ পবিত্র ও বরকতময় হয়।
- অভাবীদের সাহায্য: জাকাত আদায়ের মাধ্যমে আমরা সমাজের অভাবীদের সাহায্য করতে পারি।
- সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা: জাকাত আদায়ের মাধ্যমে সমাজে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা হয়।
- ব্যক্তিগত ও সামাজিক উন্নয়ন: জাকাত আদায়ের মাধ্যমে ব্যক্তি ও সমাজের উন্নয়ন সাধিত হয়।
জাকাত
আদায়ের নিয়ম:
- নিসাব পূরণ: জাকাত আদায়ের জন্য নির্দিষ্ট পরিমাণ সম্পদ থাকা আবশ্যক, যাকে "নিসাব" বলা হয়।
- জাকাত যোগ্যতা: জাকাত আদায়ের জন্য, সম্পদের উপর এক বছর সময় অতিবাহিত হতে হবে।
- হিসাব নির্ধারণ: জাকাতের পরিমাণ সঠিকভাবে হিসাব করা উচিত।
- বন্টন: জাকাত আটটি শ্রেণীর মানুষের মধ্যে বন্টন করা উচিত।
- নিয়ত: জাকাত আদায়ের সময় আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের জন্য নিয়ত করতে হবে।
- সৎ ও ন্যায়পরায়ণতা: জাকাত আদায়ের সময় সৎ ও ন্যায়পরায়ণ হওয়া উচিত।
জাকাত
আদায়ের ফায়দা:
- ব্যক্তিগত ফায়দা: আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভ, পাপের প্রায়শ্চিত্ত, মানসিক প্রশান্তি, সম্পদের বৃদ্ধি, শারীরিক সুস্থতা।
- সামাজিক ফায়দা: সমাজে সম্পদের বন্টন নিশ্চিত করা, অভাবীদের সাহায্য করা, সমাজে ঐক্য ও সহযোগিতা বৃদ্ধি, সমাজে অপরাধ কমে, সামাজিক স্থিতিশীলতা বৃদ্ধি।
- জাতীয় ফায়দা: দারিদ্র্য বিমোচনে সহায়তা, অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বৃদ্ধি, সামাজিক নিরাপত্তা বৃদ্ধি, দেশের উন্নয়নে সহায়তা।
জাকাত
আদায় ইসলামের একটি গুরুত্বপূর্ণ রুকন এবং এর মাধ্যমে আমরা
ব্যক্তিগত, সামাজিক ও জাতীয়ভাবে অমূল্য
ফায়দা লাভ করতে পারি। তাই, সকল সক্ষম মুসলিমের উচিত নিয়মিত ও সঠিকভাবে জাকাত
আদায় করা।
- জাকাত আদায়ের মাধ্যমে ধনী ও গরিবের মধ্যে সম্পদের বন্টন হয়।
- সমাজে ঐক্য ও সহযোগিতা বৃদ্ধি পায়।
- জাকাতদাতা আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভ করে।
- জাকাত আদায়ের মাধ্যমে পাপের প্রায়শ্চিত্ত হয়।
ঈদের আনন্দ উপভোগের পাশাপাশি, ঈদুল ফিতর জাকাত আদায়ের মাধ্যমে আল্লাহর নিয়ামতের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ এবং সমাজের অভাবীদের সাহায্য করার একটি উত্তম উপায়। জাকাত আদায়ের মাধ্যমে আমরা না শুধু নিজেদের
ধনকে পবিত্র করি, বর্তমান ও পরকালীন সফলতা
লাভের আশা করতে পারি।
আপনি যদি জাকাতের পরিমাণ নির্ধারণ বা বন্টন সম্পর্কে আরও জানতে চান, তাহলে কোনো স্থানীয় আলেমের সাথে যোগাযোগ করুন।
স্যাটেল ম্যারেজ বাংলাদেশ